ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক দুটিতে থামছে না মৃত্যুর মিছিল। রুট দুটিতে গত ১ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৩২০ জন, আহত হয়েছেন ৫৯৪ জন।
অতিরিক্ত গতি ও অদক্ষ চালকের কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে বলা হচ্ছে। তবে হাইওয়ে পুলিশ বলছে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
গত এক বছরে এই ২ মহাসড়কে ৪৩২টি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৩২০জন। আহত হয়েছেন ৫৯৪ জন।
সর্বশেষ ১৬ এপ্রিল ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কানাইপুরে যাত্রীবাহী বাস ও পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৪ জন মারা যান। এর আগে ৮ মার্চ ফরিদপুরের ভাঙ্গায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রীবাহী বাস উল্টে ৩ জন মারা গেছেন। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনা: ১৮ মাসের ইয়াসিন বাবার পর মাকে হারালো, মৃত্যু বেড়ে ১৫
এছাড়াও জানুয়ারি মাসে ২টি ঘটনায় ফরিদপুরে মহাসড়কে ৯ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
যানবাহনের অতিরিক্ত গতি, লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন গাড়ির চলাচল, মোটরসাইকেলের অনিয়মতান্ত্রিক চলাচল ও পথচারী পারাপারে অসতর্কতা কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটছে বলে মনে করছেন হাইওয়ে পুলিশ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
ফরিদপুর হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে বা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কটির দৈর্ঘ্য ৫৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে যাত্রাবাড়ী থেকে পদ্মা সেতু পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার এবং জাজিরা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সড়কে মোটরসাইকেলের কারণে নিরাপত্তা সংকট বাড়ছে
গত ১ বছরে এক্সপ্রেসওয়েতে ১৩৫টি দুর্ঘটনায় ১৩১ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ভাঙ্গা অংশে ৬৩টি দুর্ঘটনায় ৬৭ জন নিহত ও আহত হয়েছেন ৯৪ জন।
হাইওয়ে পুলিশের মাদারীপুর রিজিওনের আওতাধীন ৩৮১ কিলোমিটার মহাসড়ক নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ৫টি হাইওয়ে থানা, একটি ফাঁড়ি ও দুইটি ক্যাম্প।
হাইওয়ে পুলিশ মাদারীপুর রিজিওন ফরিদপুর কার্যালয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহিনুর আলম খান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনারোধে মামলা দায়েরসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। গত এক বছরে মহাসড়ক দুটিতে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে যানবাহন চালানোর দায়ে ২৮ হাজার ৪০৪টি যানবাহনের মালিককে মামলা দিয়ে ৯ কোটি ৪৩ লাখ ২৬ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক দুটিতে গত এক বছরে ৪৩২ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৭১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ফরিদপুর পুলিশ সুপার মোর্শেদ আলম এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সড়কে আমাদের চলাচলে আরও সচেতন হতে হবে। তা না হলে থামবে না মৃত্যুর মিছিল। শুধু যাত্রীদেরই নয়, মালিক ও শ্রমিকদের বড় ভূমিকা রাখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী বাসিন্দাদেরও দায়িত্বশীল হতে হবে মহাসড়ক ব্যবহার করার ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুন: সড়ক যোগাযোগে উন্নতির কারণে ঈদযাত্রায় কমেছে নৌপথের যাত্রী